বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল বলেছেন, খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের পাটকলগুলো বন্ধ, নিউজপ্রিন্ট মিল বন্ধ, হার্ডবোর্ড মিল বন্ধ হয়ে গেছে। সুতরাং কর্মক্ষেত্র শূণ্য হয়ে গেছে। যাদের কোন কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই। এ জন্য একটি শ্রেণি খুবই অমানবিকভাবে জীবন-যাপন করছে। তাদের সন্তানরা হতাশায় ভূগছে। বিগত ১৫ বছরে যে ফ্যাসিস্ট সরকার ছিল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির বদলে তারা কর্মক্ষেত্রগুলো লুটপাট করে বন্ধ করে দিয়েছে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকালে খুলনা মহানগরীর খালিশপুর মাওলানা ভাসানী বিদ্যাপীঠ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে কখনো নির্বাচিত হয়নি, সুতরাং জনগণ কিংবা সমাজের কাছে যে দ্বায়বদ্ধতা, সেই দ্বায়বদ্ধতার জায়গায় তারা ছিল না। ছিল না বিধায় সমাজিক কর্মকান্ডে কখনো তাদের দেখা যায়নি। জনগণের কাছ থেকে যেভাবে ভোট ছিনতাই করে নিয়ে গেছে, ঠিক তেমনভাবে জনগণের পকেট থেকে কিভাবে টাকা ছিনতাই করে নেওয়া যায়, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে কিভাবে টাকা ছিনতাই করে নেওয়া যায়, জনগণের সম্পত্তি কিভাবে লুটপাট করে নেওয়া যায় সেই কাজে তারা মত্ত ছিল। লক্ষ্য লক্ষ্য হাজার কোটি টাকা তারা দেশ থেকে পাচার করে নিয়ে গেছে। যার সামান্য একটি অংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দান করলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেহারাই বদলে যেতো। সামান্য একটি অংশ স্বাস্থ্য বিভাগে দান করলে অনেক হাসপাতালে চেহারা বদলে যেতো। সামান্য একটি অংশ মসজিদ-মাদ্রাসায় দান করলে মসজিদ-মাদ্রাসার চেহারা বদলে যেতো।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পরে আমরা চেষ্টা করছি, জনগনের অনুভূতিকে ধারণ করে জনগনের আশাআকাঙ্খা কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায়। বিএনপি জনগনের জন্য রাজনীতি করে, জনগনের পক্ষে রাজনীতি করে।
রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, মাদকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে গেলে প্রশাসনের পাশাপাশি আমাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সন্তানদেরকে খেলাধুলার মাঠে ফিরিয়ে আনতে হবে। এখান (শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) থেকে জাতীয় পর্যায়ে ক্রীড়াবিদ ও শিল্পী গড়ে উঠবে। এখান থেকেই জাতীয় পর্যায়ের মেধাবী শিক্ষার্থী বেরিয়ে আসবে। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে হবে। সন্তানদের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সম্পৃক্ত করতে হবে। মাদক থেকে দূরে থাকতে হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলাধুলা ও ডিবেটিংসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা নিয়ে জনগনের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। তারমধ্যে এসব কথাগুলো আছে। আমরা আগামী দিনে দায়িত্ব পেলে কিভাবে সমাজকে সংস্কার করব, রাষ্ট্রকে কিভাবে সংস্কার করব, কিভাবে আগামীদিনের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব, আমাদের সন্তানরা কিভাবে লেখাপড়া শিখে কর্মসংস্থানের উপযোগী হয়ে উঠবে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করব, প্রতিটি সেক্টরকে কিভাবে ঢেলে সাজিয়ে আগামীদিনের সুন্দর বাংলাদেশ গড়া যায় সেই ব্যাপারে আমাদের ৩১ দফায় বিস্তারিত আছে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ৩১ দফা নিয়ে ঘরে ঘরে যাবেন, জনগনের কাছে যাবেন। জনগনকে বুঝাবেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খালিশপুর মতি মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা আব্দুল মান্নান ও প্রভাতী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. মুনছুর রহমান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদী, খালিশপুর থানা বিএনপির সভাপতি এড. মোহাম্মদ আলী বাবু ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বিশ্বাস প্রমুখ। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা ভাসানী বিদ্যাপীঠ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আফরোজা শারমীন।
খুলনা গেজেট/এমএম